Random posts

Random Posts

Main Menu Bar

পীরগঞ্জে মাদকের থাবা: সিন্ডিকেট নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হচ্ছে গ্রামগুলোতেও

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় মাদক সিন্ডিকেটের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়ে উঠছে দিনের পর দিন। অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেটের এই নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হচ্ছে বন্দর থেকে নিভৃত পল্লী পর্যন্ত। শিশু থেকে শুরু করে হাজার হাজার যুবক তরুণ পৌঢ় মাদকের অক্টোপাসে জড়িয়ে পরিবার ও সমাজ জীবন কে করে তুলছে দুর্বিষহ। জাতীয় সমাজ বিধ্বংসী সর্বগ্রাসী মাদকের কবল থেকে মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এমনকি থানা পুলিশের কোন ভূমিকায় নেই। উপরন্তু মাদক সিন্ডিকেটের কার্যক্রম অবাধে চলার সুযোগ করে দিয়ে তাদের কাছে নগদ অর্থ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে ভূরি ভূরি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সীমান্তের কাছাকাছি এই উপজেলায় সর্বত্র সব ধরনের ইয়াবা’র খুচরা মূল্য  ৩’শ টাকা, ১০/১৫টাকায় পাওয়া যায় গাঁজা ও হিরোইনের পুরিয়া। ৫০ হতে ১৫০ টাকায় হাতের কাছে সহজেই মেলে দেশি বিদেশী রঙ্গিন মদ। আর দশটা পন্যের মতোই এসব মাদকদ্রব্য অবাধে বেচাকেনা হচ্ছে কোন প্রকার রাখটাক ছাড়াই। যে কারণে এখন মাদকের ব্যবসা এ উপজেলায় স্বাভাবিক ব্যবসার মর্যাদা পেয়েছে।

পীরগঞ্জ উপজেলায় সদর ছাড়াও প্রত্যন্ত পল্লী গ্রামে যে সব মাদক দ্রব্য ভারতের পশ্চিম দিনাজপুর বালুরঘাট পার হয়ে আবার কখনও দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত পথে আমদানিকৃত হাজার হাজার ইয়াবা ফেন্সিডিল ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি-বড়দরগা, চতরা-ধাপেরহাট-খালাশপীর রুট দিয়ে পাচার হয়ে যায়। প্রকাশ্য দিবা লোকে এসব মাদকদ্রব্য  পাচার হয়ে যাচ্ছে থানা পুলিশের পরোক্ষ সহযোগিতায়। ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা এসব মাদকে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে গোটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া আমদানিকৃত এই মাদক পাচার হয়ে যাচ্ছে রাজধানী সহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলা সমূহে। দুরপাল্লার নৈশ ও দিবা কোচগুলোতে চালকের আসনের নিচে বিশেষ কৌশলে নির্মিত গোপন বক্সের ভেতর নিরাপদ হিসেবে। প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে পার হয়ে যাচ্ছে এসব নেশাজাত দ্রব্য।

জানা যায়, ফেন্সিডিল নামের নেশা জাতীয় দ্রব্যটির কারখানা দশ বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে। তবুও চাহিদার কারণে সীমান্তের এপারে ওপারে স্থানীয়ভাবে ফেন্সিডিল তৈরী হচ্ছে। দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত পথে রাতের আধাঁরে পাচার হয়ে আসা ফেন্সিডিলের কার্টুন ওঅন্যান্য নেশাদ্রব্য নবাবগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর হয়ে কোরতোয়া নদী পেরিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার টুকুরিয়া হাট,অত:পর ভেন্ডাবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সম্মুখ ও পাশ দিয়ে শঠিবাড়ি হয়ে রংপুর শহর ও বড়দরগাহ নামক স্থানে মজুদ করা হয়। এর আগে টুকুরিয়া ভেন্ডাবাড়ি সড়কের সোনামতি ব্রীজের ধারের একটি বাড়িতে ডিপো হিসাবে মজুদ হয়। এখানে ভেন্ডাবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ৩/৪ জন সাদা পোশাকে দিবারাতে চুক্তির অর্থ আদায় করে নেশাদ্রব্য পাচারকারীদের কাছ থেকে। এ কারণে ওই তদন্ত কেন্দ্রের সম্মুখ দিয়ে নিয়মিত এগুলো পাচার হয়ে গেলেও পুলিশ নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়।

জানা গেছে, এদিকে করতোয়া পেরিয়ে নুনদহঘাট ও ন্যাংড়ারঘাট হয়ে সন্ধ্যার পর কয়েক ডজন মোটর সাইকেলযোগে চতরাহাট হয়ে ধাপেরহাট নামক স্থানে মাদকের পৃথক মজুদ গড়ে তোলা হয়। ধাপের হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরতদের সাথে বিশেষ চুক্তি থাকায় তারাও নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকেন। রাত গভীর হলে দুর পাল্লার কোচযোগে বস্তা ভর্তি নেশাদ্রব্য পাচার হয়ে যায় দুরবর্তী জেলা সমূহে। এসব তথ্য অবগত হওয়া সত্বেও পুলিশ বিশেষ কারনে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে আসছে বরাবর।

এদিকে রিক্সা, ভ্যান বাইসাইকেলযোগে ছাড়াও নিম্ম আয়ের পথচারিরা শরীরে বিশেষ কৌশলে মাদকের চালান পাচার করছে নিয়মিত। চুক্তিভিত্তিক এই পাচারের সাথে জড়িয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের কয়েক’শ নারী-পুরুষ। নামে মাত্র পারিশ্রমিকের বিনিময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এরা মাদকের চালান এপার ওপার করে থাকে। চোরাচালান সিন্ডিকেটের গড ফাদাররা উভয় দেশের সীমান্ত বাহিনী ও পুলিশ কে মোটা অংকের কমিশন দেয়ায় অধিকাংশ সময়ই মাদক পারাপারে কোন ঝুঁকি থাকে না। কিন্তু লেনদেনের সমস্যা হলেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।

সত্র বলছে, আন্ডার ওয়ার্ল্ডের এই পরিস্থিতি কে চোরাচালানীরা “বর্ডার খারাপ” নাম আখ্যা দিয়েছে। এসময় রাঘব বোয়ালরা ধরা ছোয়ার বাইরে থাকলেও চুনোপুটি ধরা পড়ে সীমান্ত রক্ষী বা পুলিশের বিশেষ বাহিনীর হাতে। রীতিমতো মামলা দায়ের করা হয় ধৃতদের বিরুদ্ধে। চালান হয়ে যায় এরা ঢাকঢোল পিটিয়ে। সমাজে এই মরণব্যধি প্রতিরোধে নির্বিকার প্রশাসনের উদাসী ভূমিকা আজ প্রশ্নবিদ্ধ ! এ নিয়ে কারো উদ্বেগ বা উৎকণ্ঠা নেই ,নেই কোন জবাবদিহীতা? এফএনএস
পীরগঞ্জে মাদকের থাবা: সিন্ডিকেট নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হচ্ছে গ্রামগুলোতেও পীরগঞ্জে মাদকের থাবা: সিন্ডিকেট নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হচ্ছে গ্রামগুলোতেও Reviewed by Admin on জুলাই ২০, ২০১৮ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Definition List

Blogger দ্বারা পরিচালিত.